Head Lines

prayer

"Lord Jesus, your grace is sufficient for me. Fill my heart with love and gratitude for the mercy you have shown to me and give me freedom and joy to love and serve others as you have taught."
Ex-Seminarians Forum can be a way through, give you support by sharing what you are best of— thoughts, ideas, minds, concepts, reflections, insights, technology, community and others— and be a progenitor of aspiration of life and faith to your fellow ExSeminarians.

Friday, December 18, 2015

নাটোরের বিখ্যাত জিনিস: কাঁচাগোল্লার ইতিহাস -০১

বাঙালি ভোজনপ্রিয়, অতিথি আপ্যায়নেও এর জুড়ি বেশ ভালোই।যার জন্য সুখ্যাতিও রয়েছে এর। খাবারের পর মিষ্টি তো থাকা চাই-ই। যে কোনো অনুষ্ঠানে অথবা খুশির সংবাদে মিষ্টি মুখ করানোর প্রচলন বাঙালি সমাজে চলছে দীর্ঘদিন থেকে। মূলত বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা খুশির সংবাদ উপলক্ষে মিষ্টিমুখ করানো মুসলমান উনাদের থেকেই গোটা বিশ্বে আজ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করেছে। বহুরকম মিষ্টি আমরা এখন পাই কিন্তু এর উৎপত্তি ঘটে মুসলমানদের খেকে। যার দরুন মিষ্টি খাওয়া মুসলমান উনাদের জন্য খাছ সুন্নত। সেই সুন্নতের তাছির ছড়িয়ে পড়েছে অমুসলিমদের মধ্যেও। এখন অমুসলিমরাও মুসলমানদের আবিষ্কৃত বিভিন্ন মিষ্টান্ন’র অমেয় উপকার ও স্বাদ পেয়ে নিজ নিজ উপায়ে মিষ্টি বানাতে চেষ্টা করে। ফলে নাটোরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই মিষ্টি যদি হয় কাঁচাগোল্লা তবে তো সবার দিল হয় মনোলভা। মনে করে সোনায়-সোহাগা আপ্যায়ন।
কাঁচাগোল্লার ইতিহাস : কাঁচাগোল্লা গোল নয়, লম্বা নয়, আবার কাঁচাও নয়। তবুও নাম তার কাঁচাগোল্লা। এ নামেই পরিচিতি দেশ-বিদেশে। আড়াইশ' বছর আগে নাটোরের কাঁচাগোল্লার কথা ইতিহাসে পাওয়া যায়। জনশ্রুতি আছে নিতান্ত দায়ে পড়েই নাকি তৈরি হয়েছিল এ মিষ্টি।

ঘটনা ০১: শহরের লালবাজারে ছিল মিষ্টির দোকান। দোকানে বেশ কয়েকটি বড় বড় চুলা ছিল। এসব চুলায় দেড় থেকে দুই মণ ছানা দিয়ে রসগোল্লা, পানতোয়া, চমচম, কালো জাম প্রভৃতি মিষ্টি তৈরি করা হত নিয়মিত। দোকানে কাজ করতেন ১০-১৫ কর্মচারী। হঠাৎ একদিন মিষ্টির দোকানের কারিগর আসেনি। তখন মালিকের তো মাথায় হাত! এত ছানা এখন কী হবে? এই চিন্তায় সে অস্থির ছিল। নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেতে ছানাতে সে চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখে। এরপর মুখে দিয়ে দেখে চিনি মেশানো ছানার দারুণ স্বাদ হয়েছে। নতুন মিষ্টির নাম কী রাখা হবে এ নিয়ে শুরু হয় চিন্তা-ভাবনা। যেহেতু চিনির রসে ডোবানোর আগে ছানাকে কিছুই করতে হয়নি অর্থাৎ কাঁচা ছানাই চিনির রসে ঢালা হয়েছে; কিন্তু রসগোল্লার ছানাকে তেলে ভেজে চিনির রসে ডোবানো হয়। তাই তার নামকরণ হয়েছে রসগোল্লা। আর কাঁচা ছানা চিনির রসে ডোবানো হয়েছে বলেই এর নাম দেওয়া হয় কাঁচাগোল্লা।

ঘটনা ০২: কাঁচাগোল্লা তৈরির পেছনে আরেকটি গল্প এখনো নাটোরের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। বাংলার শাসনকর্তা রানী ভবানীর রাজত্বকালে রানি ভবানীকে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতো লালবাজারের এক মিষ্টি বিক্রেতা । একবার সে মিষ্টি তৈরির জন্য দুই মণ ছানা কেটে রাখে। কিন্তু সকালে তাঁর প্রধান কর্মচারী দোকানে না এলে সে বিপাকে পড়ে। ছানা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় সে চিনির গরম শিরায় ছানা ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকে। শুকিয়ে এলে খেয়ে দেখে মন্দ হয়নি। ভয়ে ভয়ে এর কিছু অংশ রানির কাছে পাঠিয়ে দেয়। তা খেয়ে রানি ধন্য ধন্য করে। শুধু ছানা দিয়ে তৈরি করা হয় বলে নাম রাখা হয় কাঁচাগোল্লা।

ঘটনা ০৩: রাজভান্ডারে রেগুলার মিষ্টি সরবরাহ করতো সে সময়ের এক মিষ্টি প্রস্তুতকারক। সেই মিষ্টি পুরো রাজপরিবার খেত আবার সেই মিষ্টিই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেয়া হতো। তো বুঝা যাচ্ছে সেটার গুনগত মান কতটা নিখুত ছিল। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগেই রাজার প্রাসাদে মিষ্টি পৌছে দেয়া হতো। রাজা প্রতিদিন সকালে ঐ মিষ্টি খেতো।একদিন দেখা গেলো সেই মিষ্টি সরবরাহকারী মিষ্টি দিতে আসেনি। সকালে উঠে রাজার খাওয়া ও একটি অনুষ্ঠানের জন্য মিষ্টি না পেয়ে মেজাজ যায় চটে।রাজা খোঁজ করতে বললো সেই সরবরাহকারীকে। সব পাইক পেয়াদা সেই লোককে ধরে আনলো। কিন্তু সে কোন কথা বলে না। রাজার হুংকারে কম্পমান কন্ঠে বলে, "হুজুর আজকে ছানাটা নষ্ট হয়ে গেছে, তাই মিষ্টি বানাতে পারিনি।" এদিকে রাজার মিষ্টির নেশা। রাজা বললো, "কি বলছো তোমার মিষ্টি নষ্ট হয়ে গেছে? যাও যা হয়েছে সেটাই নিয়ে আসো।" তো সেই লোক সেইটা নিয়েই আসলো। রাজা দেখলো যে, আরে এটাতো কাঁচা ছানা, আবার তাও নয়। এটাকে তো আর গোল করে মিষ্টির রূপও দেয়া যাবে না। অগত্যা রাজা একটু হাতে নিয়ে চেখে দেখলো। কিন্তু মুখে দেবার পরে সেই লোককে উনি খুব প্রসংশা করতে লাগলো। আর বললো, "বেয়াদবী করো আমার সাথে? এত সুন্দর মিষ্টি বানিয়ে বলছো, মিষ্টি নষ্ট হয়ে গেছে?" তারপর থেকেই অন্যান্য মিষ্টির সাথে এ নতুন মিষ্টিও নিয়মিত রাজার বাড়ীতে পৌছে দিতে হতো।

No comments:

Post a Comment